সাবুদানার পায়েস কীভাবে তৈরি করবেন?

সাবুদানা কোন কেমিকেল পণ্য নয়। সাবু সৃষ্টি হয় গাছে। সাবুদানার পুষ্টিগুণ জানলে অবাক হবেন। এতে আছে ক্যালরি-৩৩২ গ্রাম, প্রোটিন-১ গ্রাম, ফ্যাট-১ গ্রাম, কার্বস-৮৩ গ্রাম, ফাইবার-১ গ্রাম, জিঙ্ক-১১%।  সুতরাং এটি খেতেই পারেন। সাবুদানা কী উপায়ে খেতে হয় সেটা জানা প্রয়োজন। সাবুদানার পায়েস খেতে বেশ। সাবুদানাকে সাগুও বলা হয়।

সাবুদানার পায়েস কীভাবে তৈরি করবেন? সাবুদানা পায়েস রান্নার জন্য প্রথমে সাবুদানা ধুয়ে আধা ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পানি ছেঁকে দেড় কাপ ফ্রেস পানিসহ সাবুদানা চুলায় দিন। চুলার আঁচ মাঝারি রাখতে হবে। এসময় সাবুদানা ঘন ঘন নেড়ে সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। সাবুদানা সিদ্ধ হয়ে এর আকার দ্বিগুণ হয়ে যাবে। 

সাবুদানার পায়েস রান্না পূর্ণ করার জন্য আরো কিছু কাজ করতে হবে। সাবুদানার পায়েসটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক সাবুদানার পায়েস তৈরির পূর্ণ রেসিপি-

সাবুদানা


সাবুদানার পায়েস তৈরি করতে যা লাগবে

সাবুদানা- ১/৩ কাপ, গুঁড়া দুধ- ১/২ কাপ, তরল দুধ- ৩ কাপ, চিনি- ১/২ কাপ বা স্বাদমতো, হ্যাভি ক্রিম- ১ কাপ, লবণ- ১ চিমটি, কেওড়া জল- ১/২ চা চামচ, বাদাম কুচি- ১/৪ কাপ, মোরব্বা- পরিমাণমতো।


 যেভাবে তৈরি করবেন সাবুদানার পায়েস: সাবুদানা পায়েস রেসিপি

প্রথমেই সাবুদানা ধুয়ে আধা ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর জল ছেঁকে দেড় কাপ পানিসহ সাবুদানা চুলায় জ্বাল দিন। 

ওভেনের আঁচ মাঝারি রেখে সাবুদানা ঘন ঘন নেড়ে সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত গরম করতে থাকুন। সাবুদানা সিদ্ধ হয়ে এর আকার দ্বিগুণ হয়ে গেলে পাত্র চুলা থেকে নামিয়ে দিন। 

আলাদা হাড়িতে দুধ জ্বাল করুন। তরল দুধের সাথে গুঁড়া দুধ এবং চিনি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এক চিমটি লবণ দিন। দুধ কমে অর্ধেক হয়ে গেলে এবার এর মধ্যে ক্রিম দিন। আগে থেকে সেদ্ধ করে রাখা সাবুদানাগুলো ঢেলে ভালো করে নেড়ে দিন। লক্ষ্য করবেন সাবুদানা দুধে ফুটছে। পায়েস হয়ে গেছে প্রায়। এবার চুলা বন্ধ করে দিন। 

পায়েসে একটু গোলাপজল মিশিয়ে দিন। এরপর পায়েস সারভিং ডিশে ঢেলে উপরে বাদাম, মোরব্বা কুচি দিয়ে সাজিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিন। 

এবার পরিবেশন করুন সাবুদানার মজার পায়েস।


সাবুদানা খাওয়ার উপকারিতা কী? 

সাবুদানা হাড়ের স্বাস্থ্য বাড়ায়: এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং আয়রন, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ দেয়। 

সাবু হজমে সাহায্য করে: সাগুতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে, যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। 

সাবু ওজন বাড়াতে সাহায্য করে: সাগু একটি উচ্চ ক্যালোরি-যুক্ত খাবার এবং যাদের ওজন বাড়াতে হবে তাদের জন্য বেশ উপকারী ।


সাবুদানা খেলে নারীদের কী হয়?

নারীদের মাসিক হওয়ার আগে ক্ষুধামন্দা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে দুপুরের খাবারের সময় টকদইয়ের সঙ্গে একটি ছোট বাটি সাবুদানা খেলে শক্তি পাবেন গায়ে। মোটা মেয়েদের এটি এড়িয়ে যাওয়া ভাল।

একটি ছোট বাটি সাবুদানা খিচুড়ি প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গর্ভবতী অবস্থার নারী সপ্তাহে দুইবার সাবুদানা খেতে পারেন।

আবার মেনোপজ ও অ্যান্ডোমেট্রিওসিসের ক্ষেত্রে, সপ্তাহে একবার বা মাসিক চক্রের চতুর্থ দিনে একটি ছোট বাটি সাবুদানা খেতে পারেন


অতিরিক্ত সাবুদানা খাওয়ার অপকারিতা

সাগুর মধ্যে প্রচুর ক্যালোরি থাকে। কারণ সাবুদানা প্রধানত স্টার্চ জাতীয় খাবার। আর স্টার্চ হল কমপ্লেক্স কার্ব, যার মধ্যে থাকে গ্ল‌ুকোজ মলিকিউলস, যা শরীরকে খুব এনার্জি দেয়। তবে এর মধ্যে প্রোটিন ও ভিটামিন খুব বেশি থাকে না বিধায়  সাবুদানা একবারে খুব বেশি পরিমাণে খাবেন না। খেলে মুটিয়ে যাবেন। ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগ জন্ম নিতে পারেন।


আরো পড়ুন: ঘরে জিলাপি বানানো সহজ


এতক্ষণ সাবুদানার উপকারিতা, অপকারীতাসহ সাবুদানার পায়েস রান্নার রেসিপি জানলেন। মনে রাখবেন এতে প্রচুর ক্যালরি আছে। সাবুদানার খিচুড়ি ফ্লু ও জ্বর থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য খাওয়ানো হয়। এটি ক্ষুধা কমাতেও সাহায্য করে। সাবু বা সাগু’র উপকারিতার সাথে সাথে এর বড় অপকারীতা হলো এটি বেশি খেলে শরীরে বাড়তি ক্যালরি যোগ হয়ে যাবে।


Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form