ঘুম কমানোর উপায় কী? হতাশ হতে না চাইলে জানুন।

যখন ঘুম কম হচ্ছে বলে অনেক ব্যক্তি ডাক্তারের কাছে গিয়ে ঘুম ভাল হবার জন্য ওষুধ দিতে বলেন, ঠিক সেই সময় কিছু ব্যক্তি অতি ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন। তারা ঘুম বেশি হবার কারণে কোন কাজ করতে পারেন না সময়মত। তাদের বেলা চলে যায় ঘুমিয়ে আর তারা জীবনের উন্নতির ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েন। ঘুম কমানোর কোন উপায় রয়েছে কিনা আমরা এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছিলাম।

ঘুম কমানোর উপায়
Image: Acharaporn Kamornboonyarush, Pexels

আচ্ছা, ঘুম কমানোর উপায় কী? ঘুম কমানোর জন্য আপনাকে একটি রুটিনের মধ্যে চলে আসতে হবে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে গেলে আপনার ঘুমের পরিমাণ সুনির্দিষ্ট হবে। বিশেষ করে আপনাকে ডেল্টা স্লিপের রুটিনটি ফলো করতে হবে অতি ঘুমের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে।

রাতের যে কোন একটি সময়কে ঘুমের সময় বানালেই চলবে না। এতে আপনার সময় অপচয় হতে পারে। আপনি মাঝের অংশটিকে নিবেন ঘুমের জন্য। কিন্তু কেন? নিচে ঘুম কমানোর উপায় এবং কেন বেশি ঘুম এর সমস্যা হয় এবং ডেল্টা স্লিপ কী এসব বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হচ্ছে।


ঘুম কমানোর উপায় কী?

আপনি যখন ঘুম কমাবেন বলে ঠিক করেছেন তখন আপনি একটি রুটিনে চলে আসুন। আমরা আপনাকে অল্প কিন্তু ভাল ঘুমের জন্য নিচের রুটিনটি ফলো করার পরামর্শ দিচ্ছি।

আপনি আপনার সন্ধ্যার পড়াশোনা বা অন্যান্য কাজ দেরি করে শুরু করবেন না। সন্ধ্যা হবার সাথে সাথেই কাজ শুরু করুন।

আপনি সন্ধ্যায় যদি চা কফি কিছু পান করতে চান তাহলে সেটিও খুব দ্রুত সারুন। নাস্তা করতে চাইলে খুবই হালকা নাস্তা করুন যেন রাতের খাবার গ্রহণের জন্য খিদে লাগতে বেশি সময় না লাগে।

আপনি পড়াশোনা বা কাজ থেকে উঠে পড়ুন রাত ৮ টা থেকে ৯ টার মধ্যে। 

আপনি রাতের খাবার গ্রহণ করুন রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে। ডাক্তাররা আপনাকে ৯টার মধ্যে খেয়ে নিতে বলবেন।

খাবার গ্রহণের পর আপনি ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটহাটি করে নিতে পারেন। 

তারপর আপনি আবার কোন কাজ করতে পারেন। টিভি দেখা, বই পড়া, বা অন্য কাজ সারুন এই পর্যায়ে।

আপনি দাঁত পরিষ্কার করে শুয়ে পড়ুন রাত ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে। 

ঘুম থেকে অবশ্যই ৫ টা থেকে ৬টার মধ্যে উঠে পড়ুন।

এই রুটিন আপনি চালিয়ে যান। টানা কয়েকদিন করলে আপনার শরীর এতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। আপনি চাইলেও সকালে বেশি সময় ধরে শুয়ে থাকতে পারবেন না।


নোট: শুয়ে ফোন ব্যবহারের অভ্যাস থাকলে বাদ দিতে হবে।

দিনের বেলা বিশ্রাম  বা ঘুম নিতে চাইলে সেটি যেন ১ থেকে দেড় ঘণ্টার বেশি না হয়।

চা-কফি পান কমাতে হবে।


ডেল্টা স্লিপ কী?

রাত ১১ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত সময়ের ঘুমকে ডেল্টা স্লিপ বলে। এই ঘুম যদি কেউ না পায় তাহলে বাকি ২৪ ঘন্টায় ২০ ঘন্টা ঘুমালেও ঘুমের কাঙ্ক্ষিত তৃপ্তি মিলে না। আর ডেল্টা স্লিপ না পাওয়ার ফলে ব্রেনের কার্যক্ষমতাও হ্রাস পায় বলে ডাক্তাররা জানতে পেরেছেন। সঠিক সময়ে ঘুম না পেলে পড়তে, খেতে এবং যেকোনো কাজ করতে আলসেমি অনূভুত হয়। এতে কাজ কর্মে মন বসে না।

ছয় ঘন্টা ঘুমিয়েই সারাদিন সক্রিয় থাকতে পারবো?

রাত ১১-৫ টা পর্যন্ত ঘুমালেই হবে। আপনি ফিট থাকতে পারবেন।

ধরুন-আপনি কোন দিন রাত ১০ টায় ঘুমাতে যান, আবার কোন দিন ঘুমাতে যান রাত ২ টায়। ১০ টায় ঘুমিয়ে উঠে পড়ছেন হয়ত ভোর ৫ টায়। ৭ ঘণ্টা ঘুম হলো। 
আবার-যেদিন আপনি রাত ২ টায় ঘুমাতে গিয়েছিলেন সেদিন আপনার ৭ ঘণ্টা ঘুম হয় সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘুমালে। কিন্তু আপনি ৯টায় উঠতে পারছেন না। খেয়াল করলে দেখবেন- এমনকি আপনি ১১ টা বা ১২ টা কিংবা ১টা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছেন। তাতেও আপনার শরীর ফ্রেস হতে পারছেনা। এর কারণ মূলত আপনি রাতের মাঝের অংশটি ঘুমাচ্ছেন না। আপনি ছয় ঘণ্টা ঘুমালেই ফিট থাকতে পারবেন যদি আপনি ১১ টা থেকে ৫টা কিংবা ১০ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত ঘুমান।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে অল্প বয়সীদের অন্তত ৭ ঘণ্টা রাতের ঘুম দরকার।
শিশুদের ঘুম আরো বেশি লাগে।


তাহলে, ঘুম কমানোর জন্য যে কোন সময় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমালেই চলবে কি? মোটেও না। ঘুম যদি কমাতে চান তাহলে আপনাকে রাতের মাঝের অংশটিসহ ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। ঘুম কমানোর উপায় হিসেবে আমাদের দেওয়া রুটিনের কাছাকাছি একটি রুটিন বানিয়ে ফেলুন। সুস্থ থাকুন। 

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form