তারেকের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
পলাতক আসামি হিসেবে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে আাগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তারেক রহমানের পাসপোর্টের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপিত আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার বন্ধে আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনা মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন।
ভবিষ্যতে কোনো পত্রিকা, ইলেট্রনিক মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যমে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেকের বক্তব্য প্রকাশ, প্রচার, সম্প্রচার বা পুনঃউৎপাদন বন্ধের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে তথ্য সচিবের প্রতি নির্দেশনা চান বাদী।
তার আবেদনে তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও তারেক রহমানকে বিবাদী করা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রিটে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিতে তথ্য সচিবের প্রতি কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না- তা জানতে রুল চাওয়া হয়।
বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য দেওয়া হয়।
আবেদনে বলা হয়, ‘ফেরারি আসামি’ তারেক রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে নানা ‘অপরাধমূলক’ কথা বলছেন, যা দণ্ডবিধি অনুসারেও অপরাধ। এর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের অনুভূতিতে আঘাত দিচ্ছেন, যা তথ্য প্রযুক্তি আইন অনুসারে অপরাধ। এর মাধ্যমে তিনি শান্তিভঙ্গ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছেন। পলাতক এই আসামির বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় পুনরাবৃত্তিতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। গণমাধ্যম পুনঃউৎপাদন না করলে এর পুনরাবৃত্তির সুযোগ থাকবে না।
আদালতে রিট আবেদনের শুনানিতে অংশ নেন এডভোকেট সাহারা খাতুন, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও স ম রেজাউল করিম প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বিশ্বিজিৎ রায়।
আদালতে রিট আবেদনকরীর পক্ষে শুনানিতে বলা হয়, তারেক রহমান একাধিক মামলার পলাতক আসামি। একজন ফেরারি আসামির বক্তব্য গণমাধ্যেম প্রচার হতে পারে না। যিনি আদালতের কাছে ফেরারি আসামি, যাকে আদালত খুঁজে পাচ্ছে না তার বক্তব্য প্রচারযোগ্য নয়।
২১ অগাস্টসহ বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে গত ছয় বছর ধরে তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে বিতর্কিত হন বিএনপির এ নেতা। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে আদালত।
গত ১৬ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তিনি রাজাকার’ বলেন। এর আগে ৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুকে তিনি ‘পাকবন্ধু’ আখ্যায়িত করে তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করার দাবি তোলেন।