ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত ৩ পুলিশ কর্মকর্তা
ফেনীতে র্যাবের হাতে ইয়াবাসহ আটক ঢাকা মহানগর পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহফুজুর রহমানের গাড়ি চালক জাবেদ আলী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে তিন পুলিশ কর্মকর্তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে ফেনীর চিফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকীর কাছে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রমতে, আদালতে জাবেদ আলী নিজেকে এএসআই মাহফুজের ব্যক্তিগত চালক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করেন কক্সবাজার গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপপরিদর্শক মো. বেলাল ও চট্টগ্রাম পুলিশের কুমিরা হাইওয়ে ইনচার্জ মো. আশিক। সেসব ইয়াবা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন এএসআই মাহফুজ। মাহফুজ কক্সবাজার থেকে ইয়াবা আনার পথে প্রথমে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার এলাকার গিয়াস উদ্দিনকে দেন। তারপর ঢাকার শনি এলাকা, পল্টন ও মাহফুজের শপিং মলে বণ্টন করেন।
জাবেদ আলী আরো জানান, ঘটনার দিন তিনি আর এএসআই মাহফুজ ঢাকা থেকে গিয়ে কক্সবাজারের গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপপরিদর্শক মো. বেলাল বাসায় উঠেন। সেখান থেকে ইয়াবা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। এসময় তাদের সঙ্গে ছালেহ নামে এক লোক গাড়িতে উঠেন। তিনি পেছনে আরেকটা গাড়ি আছে বলে চট্টগ্রামের শীতাকুণ্ডু এলাকায় প্রাইভেটকার থেকে নেমে যান। এর মধ্যে একটি গাড়ি ফেনীর লালপুরে আটক হলে পেছনের গাড়িটি নিয়ে অন্য একটি দল পালিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিনুজ্জমান ১৬৪ ধারায় জাবেদ আলীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জাবেদ আলীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এর আগে গত ২৪ জুন মাহফুজুর রহমান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী যাদের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল, তারা হলেন- হাইকোর্টের মুহুরি মো. মোতালেব, আইনজীবী জাকির, তোফাজ্জল হোসেন, এসবি কনস্টেবল শাহীন, কাশেম, আজাদ, গিয়াস, মামা গিয়াস, সেলিম, বিল্লাল, মামা হান্নানসহ অনেকে।
প্রসঙ্গত, গত ২০ জুন রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী সদর উপজেলার লালপুল এলাকায় র্যাব সদস্যরা একটি প্রাইভেটকারসহ এএসআই মাহফুজুর রহমান ও তার গাড়িচালক জাবেদ আলীকে আটক করেন। পরে গাড়ি তল্লাশি করে ২৭ কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যের ৬ লাখ ৮০ হাজার ইয়াবা, ৭ লাখ টাকা, চারটি মোবাইল ফোনসেট, ৮টি ক্রেডিট কার্ড এবং তিনটি নোটবইতে ২৮ কোটি টাকার ইয়াবা বিক্রির লেনদেনের হিসাবসহ বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়। ফেনীস্থ র্যাবের ডিএডি নায়েক সুবেদার মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মাহফুজুর রহমানসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা, গাড়িচালক জাবেদ আলীসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।